মে দিবস কবে কোথায় প্রথম পালিত হয় সর্ম্পকে বিস্তারিত জানুন
মে দিবস কবে কোথায় প্রথম পালিত হয় কে হয়তো অনেকেই জানেন না। আজকের এই আর্টিকেল এর মূল টপিক হচ্ছে মে দিবস কবে কোথায় প্রথম পালিত হয় সেই সম্পর্কিত। এ সম্পর্কে জানতে হলে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে।
প্রিয় পাঠক বা দর্শন এটি ছাড়াও মে দিবসের ইতিহাস আন্তর্জাতিক মে দিবস বাংলাদেশের মে দিবস বিশ্বব্যাপী মে দিবস উদযাপন ইত্যাদি সম্পর্ক জানতে হলে আর্টিকেলটি পড়তে হবে।
ভূমিকা
মে দিবস পালিত হয় প্রতি বছরের মে মাসের প্রথম তারিখে। শ্রমিকের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আন্দোলনের রক্ত স্রোত স্মৃতি বিজড়িত এই দিবসটি পালিত হয়। শ্রমিক মালিক সুসম্পর্ক প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে শ্রমিকরা প্রতি বছর মে দিবস পালন করে থাকে। আজ থেকে প্রায় দেড়শত বছর আগে শ্রমিকদের আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে শ্রমজীবীদের বিজয় ধারা অক্ষুন্ন থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় প্রতিবছর মে দিবস পালন করা হয়।
মে দিবস কবে কোথায় প্রথম পালিত হয়
কোম্পানির মালিক শ্রমিকদের উপরে নানান অত্যাচার করতো তারা ৮ ঘণ্টার পরিবর্তে ১৪ ঘণ্টা কাজ করিয়ে নিতো এরই সুবাদে ১৮৮০ সালে প্রথম আমেরিকার শ্রমিকরা ৮ ঘন্টা কাজ করার দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন ফলে ১৮৮৪ সালে তারা সংগঠনিকভাবে আট ঘন্টা দৈনিক কাজ করার প্রস্তাব করেন। সেই সুবাদে প্রথম মে দিবস পালন করা হয় ১৮৮৯ সালে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে। সেই থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ আন্তর্জাতিক শ্রম দিবস হিসেবে পালন হয়ে আসছে।
মে দিবসের ইতিহাস
কোম্পানির মালিকগণ কর্মীদের উপরে শ্রমের শোষণের বিরুদ্ধে জোড় সংগ্রামের সব সময় সোচ্চার ছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে দাস বিলুপ্ত বাস শ্রমজীবীরা ধীরে ধীরে তাদের শ্রমের মর্যাদা ফিরে পেতে সংগ্রাম শুরু করল।
কোম্পানি মালিকেরা শ্রমজীবীদের কাজের ঘন্টার কোনো নির্ধারিত ছিল না তারা প্রয়োজনে 16 থেকে 18 ঘন্টা শ্রম আদায় করে নিত যা স্বাভাবিকভাবে মেনে নেওয়া যেত না। ফলে একসময় শ্রমিকরা আন্দোলনে রাজপথে বেরিয়ে আসলো। শুরু হলো শ্রমজীবীদের বিপ্লব তাদের মূল কথা হচ্ছে তারা দিনে আট ঘন্টা কাজ করবেন।
এরই ফল ধারায় হাজার ১৯৮০ সালের প্রথম আমেরিকা শ্রমিকরা ৮ ঘণ্টার কাজের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন। ১৯৮৪ সালে সাংগঠনিকভাবে ৮ ঘণ্টা কাজ করার জন্য মালিকপক্ষের নিকট প্রস্তাব পাঠান। এই প্রস্তাবে তাদের কাজের সময় নির্ধারণ করে দেই 1986 সালের পহেলা মে পর্যন্ত। কিন্তু মালিকপক্ষ তাতে মেনে নিতে চাই নাই ফলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় তিন লক্ষ শ্রমিক তাদের কাজ ফেলে রাস্তায় বের হয়ে আসেন।
শ্রমিক নেতা জোয়ান মোস্ট, আগস্ট স্পীজ,ও লুই লিং তাদের নেতৃত্বে পহেলা মে চিকাগোতে তারা মহা সমাবেশ তৈরি করেন। পুলিশের গুলিতে শ্রমিকরা হতাহত এবং অনেকেই মৃত্যুবরণ করেন। অবশেষে যুক্তরাষ্ট্রের মালিকপক্ষ সকল দাবি মেনে নিয়ে বিশ্বজুড়ে প্রতিষ্ঠিত হয় শ্রমিক অধিকার।
মে দিবস অনুচ্ছেদ
প্রতি বছর ১ লা মে তারিখ বিশ্বব্যাপী উদযাপিত হয় আর্ন্তজাতিক শ্রমিক দিবস বা মে দিবস।পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে শ্রমজীবী মানুষ এবং শ্রমিক সংগঠনসমূহ রাজপথে সংগঠিতভাবে মিছিল ও শোভাযাত্রার মাধ্যমে দিবসটি পালন করে থাকে। পহেলা মে জাতীয় ছুটির দিন বাংলাদেশসহ বিশ্বের প্রায় ৮০টি দেশে । ১৮৮৬ সালে আমেরিকার শিকাগো শহরের হে মার্কেটের ম্যাসাকার শহিদের আত্মত্যাগকে স্মরণ করে দিবসটি পালিত হয়।
মে দিবস বাংলাদেশে সরকারী ছুটি। দিনটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী বক্তব্য দিয়ে থাকে শ্রমিকদের উদ্দেশ্যে। সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা ও সংগঠন দিনটি পালন করতে শোভাযাত্রা, শ্রমিক সমাবেশ, আলোচনা সভা, সেমিনার, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ নানা কর্মসূচি পালন করে থাকে । মে দিবসে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, শ্রমিক ফেডারেশনসহ বিভিন্ন সংগঠন কর্মসূচি পালন করে। প্রতিবছর একটি প্রতিপাদ্য বিষয় নিয়ে মে দিবস উদযাপন করা হয়। ২০২৩ সালের প্রতিপাদ্য বিষয় হলো-
‘শ্রমিক মালিক ঐক্য গড়ি,
‘স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলি’।
মে দিবসের ছবি
মে দিবস কবে পালিত হয়
প্রতিবছর শ্রমিকদের আত্মেত্যাগকে স্মরণ করার উদ্দেশ্যে মে মাসের প্রথম তারিখে মে দিবস পালিত হয়। মে দিবসকে কেন্দ্র করে নানা আলোচনা সভা, সেমিনার করে থাকে। প্রতিবছর ১লা মে কে মে দিবস থাকে ঘোষণা করা হয়। ফলে সারা বিশ্বব্যাপি প্রতিছর মে দিবস পালন করে থাকে।
আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস
শ্রমিক নেতাদের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে ১৮৮৯ সালে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে মে দিবসকে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস হিসেবে ঘোষণা করেন। এর মাধ্যমে প্রথম এই দিবসটি পালন করা হয়। পরবর্তী বছর ১৮৯০ সালে পহেলা মে দেশের বিভিন্ন স্থানে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস হিসেবে পালন করে। সে থেকে এখন পর্যন্ত পহেলা মে কে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস হিসেবে পালন করা হয়।
মে দিবসের তাৎপর্য
বর্তমান শ্রেণী বৈষম্যহীন সভ্য সমাজ গড়ে তুলতেন ১৮৮৬ সালের পর থেকে শ্রম আন্দোলন বা মে দিবসের জন্ম সভ্য ইতিহাসের মে দিবসের তাৎপর্য এর গুরুত্ব অপরিসীম। সারা পৃথিবী জুড়ে শ্রম আন্দোলন ও শ্রমিকদের আদায়ের সুফল বয়ে এনেছে মে দিবস। সম্রাজ্যবাদী ও পুঁজিবাদী বিরুদ্ধে সংগ্রাম গড়ে তুলে এই মে দিবস। এই দিবসের মাধ্যমে শ্রমিকরা তাদের ন্যায্য মজুরি সহ তাদের শ্রমের মূল্যায়ন ঘটিয়েছে। আর তাদের সংগ্রামের মাধ্যমে পুরো সমাজে আলোয় আলোকিত হয়ে উঠেছে। এ সংগ্রামের মধ্য দিয়ে মালিক ও শ্রমিকদের মধ্যে একটি বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে উঠেছে।
মে দিবস কত সাল থেকে পালিত হয়
১৮৮৯ সালে প্যারিসে সম্মেলনের পর থেকে মে দিবস পালিত হয়ে আছে। ১৮৮৯ সালের পর থেকে এখন পযন্ত প্রতিবছর মে মাসের প্রথম তারিখে মে দিবস পালিত হয়ে আসছে।
শ্রমিক দিবস কেন পালিত হয়
শ্রমিক দিবস পালন করার অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে শ্রমিকেরা তাদের অধিকার আদায়ের জন্য অনেক আঘাত এবং অনেকে নিহত হয়েছে। তাদের স্মরণের উদ্দেশ্যে শ্রমিক দিবস পালন করা হয়। তাদের আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে শ্রমিকরা তাদের দৈনিক 8 ঘন্টা কাজ করা সুযোগ পায়। শ্রমিকদের আত্মার মাগফিরাতের উদ্দেশ্যে প্রতিবছরে পহেলা মে শ্রমিক দিবস পালন করা হয়।
ভারতে প্রথম কে কবে মে দিবস পালন করেন
১৯২৩ সালে ১লা মে ভারকত সর্বপ্রথম মে দিবস পালন করা হয়।যেখানে সর্বপ্রথম মে দিবস পালন করা হয় তার বর্তমান নাম চেন্নাই বা মাদ্রাজ। ভারতের লেবার কিষাণ পার্টি সর্বপ্রথম মে দিবস আয়োজন করেন।
লেখকের মতামত
আমি আপনাদের সামনে মে দিবসের গুরুত্ব ও তাৎপয তুলে ধরেছি। ঐতিহাসিক মে দিবসের তাৎপর্যপূর্ণ অবদান আজকে শ্রমিকদের আগলে রেখেছে। এই আর্টিকেলটি পড়লে মে দিবস সর্ম্পেকে জানতে পারবেন। এই আর্টিকেলটি পড়ে যদি উপকৃত হন তাহলে একটি কমেন্ড ও শেয়ার করে দিবেন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url