কোন সময়ের রোদ ক্ষতিকর সর্ম্পকে বিস্তারিত জানুন
কোন সময়ের রোদ ক্ষতিকর এই সম্পর্কে গুগলে অনেক খোঁজাখুঁজি করছেন। আজকে এ আর্টিকেলের মূল টপিক হচ্ছে কোন সময় রোদ ক্ষতিকর। আপনারা যদি আর্টিকেল টিম মনোযোগ সহকারে পড়েন তাহলে এ সম্পর্কে জানতে পারবেন।
প্রিয় পাঠক এছাড়াও রোদের উপকারিতা অপকারিতা বাচ্চাদের রোদ লাগানোর নিয়ম ইত্যাদি বিষয় তুলে ধরা হয়েছে।
ভূমিকা
রোদ আমাদের জন্য খুবই উপকারী। কিন্তু অনেকেই ভাবেন যে রোদ আমাদের ত্বকের জন্য অনেক ক্ষতিকর। এমনকি রোদে গেলে ত্বক পুড়ে যাওয়া সম্ভাবনা থাকে। রোদের ক্ষতিকর আল্ট্রাভায়োলেট রে ত্বকের প্রচুর ক্ষতি করে কিন্তু রোদে যথেষ্ট পরিমাণ উপকরণ রয়েছে। রোদ থেকে আমরা ভিটামিন ডি পায়।
যা আমাদের দেহের জন্য খুবই উপকারী এমনকি শিশুদের জন্য রোদ সবচাইতে উপকারী কারণ রোদ থেকে আমরা যথেষ্ট পরিমাণে ভিটামিন ডি পাই। তাই আমাদের নিয়ম করে প্রত্যেকদিন একটু করে হলেও রৌদ্রে যাওয়া উচিত শরীরে যদি ভিটামিন ডি থাকে তাহলে পটাশিয়াম ম্যাগনেসিয়াম ও ক্যালসিয়াম তৈরি হয়। তাই এই ভিটামিন ডি কে বলা হয় ‘‘সানশাইন ভিটামিন‘‘।
বাচ্চাদের রোদ লাগানোর নিয়ম
বাচ্চাদের ত্বক অনেক নরম। তাই বাচ্চাদের সকাল বেলা সূর্যালোকে হালকা মৃদু সূর্যের আলোকে নিয়ে আসা হয় কারণ ভিটামিন ডি রয়েছে এ রোদে । ভিটামিন ডি বাচ্চাদের শরীরের ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম তৈরি করেন যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে শক্তিকে উজ্জীবিত করে ক্যান্সার ও নানারকম রোগে নির্ময় হিসেবে কাজ করে। বাচ্চাদের বয়স অনুযায়ী রোদ লাগানোর কিছু নিয়ম রয়েছে। সেগুলো হল
- বাচ্চা যদি নবজাতক শিশুর হয় তাহলে সরাসরি রৌদ্রে না রেখে সকালে মিষ্টি রোদে দুই থেকে তিন মিনিট রাখা উচিত
- ছয় মাস বা তার চেয়ে বেশি হলে সরাসরি রোদ পড়লে তাতে কোন ক্ষতি হয় না। কারণ রোদে রয়েছে ভিটামিন ডি।
- যে বাচ্চাদের বয়স ১ থেকে ৪ বছর তাদের জন্য সপ্তাহে ২ থেকে ৩ দিন রোদে থাকে উচিত। তাহলে বাচ্চা শরীরে যথেষ্ট পরিমাণে ভিটামিন ডি পাওয়া যাবে।
রোদ থেকে ভিটামিন ডি পাওয়ার সময়
ভিটামিন ডি এর প্রধান উৎস হচ্ছে সূর্য থেকে আমরা পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন ডি পায়। অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেন সকাল থেকে বিকাল 3 টা পর্যন্ত যথেষ্ট পরিমাণে ভিটামিন ডি পাওয়া যায় রৌদ্রে। আপনি যখন রোদে বের হবেন তখন দেখবেন আপনার ছায়া আপনার যদি ছোট হলে ও সময় পর্যন্ত কোন মানে ভিটামিন ডি পাওয়া যায়।
আমাদের দেশের অনেক মানুষের গায়ের রং সামলা বর্ণের। ভিটামিন ডি শোষণের ক্ষেত্রে বাধা প্রাপ্ত হয়। কিন্তু যাদের গায়ের রং ফর্সা তাদের বিশ মিনিট রৌদ্রে দাঁড়ালে যথেষ্ট। তবে সবচাইতে উত্তম ভিটামিন ডি পাওয়া যায় সকালে ঘুম থেকে উঠে যখন হালকা রোদে বা মিষ্টি রোদ দাঁড়ায় তখন যথেষ্ট পরিমাণে ভিটামিন ডি পাওয়া যায়।
এ সময় ত্বকের কোন ক্ষতি হয় না তখন অনেক মসৃণ থাকে। বয়স বাড়ার সাথে সাথে মানুষের দেহের ভিটামিন ডি এর পরিমাণ কমতে থাকে হলে অনেকেরই হাড়ের ক্ষয় সৃষ্টি হয়। এতে অনেকেই হাঁটতে পারে না ফলে বাসায় বা রুমে বসে থেকেদিনপার করে। কিন্তু ঘরে বসে না থেকে যদি রোদ্রের বসে থাকে তাহলে যথেষ্ট পরিমাণে ভিটামিন ডি পাওয়া যাবে।
সকালের রোদের উপকারিতা
সকালে রোদের উপকারিতা অনেক। সকালে রোদকে অনেকেই মিষ্টি রোদো বলে। আপনি হয়তোবা জানতে চেয়েছেন যে সকালের রোদের উপকারিতা সম্পর্কে। সকালে রোদে আমাদের ত্বক অনেক ভালো রাখেন ত্বক পুড়ে না ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়। সকালে রোদের উপকারিতা গুলো হল
ডিপ্রেশন কমায়ঃ সকালে সূর্যের আলোকরশ্মি আমাদের ব্র্যান্ডের হরমো বৃদ্ধি করে। যাকে এক কথায় বলা হয় সেরোটনিন। সেরোটনিন অনেক উপাদান যা আমাদের যে কোন কাজে মনোযোগ বৃদ্ধি করে। সূর্যের আলো পর্যাপ্ত পরিমাণ না পেলে এটি মোটেই কাজ করে না হলে আমরা বিভিন্ন ডিপ্রেশনে পড়ে যায়। এবং বিভিন্ন সমস্যা সৃষ্টি হয় শরীরের মধ্যে।
ওজন কমাতে সাহায্য করেঃ দেহের ওজন কমাতে রোদ আমাদের অনেক উপকার করে। কারণ সকালে রোদ অনেক মিষ্টি তাই আমাদের ত্বকের কোন ক্ষতি করে না এবং বয়স ও উচ্চতা অনুযায়ী আমাদের ওজন যথেষ্ট পরিমাণে ঠিক থাকে। তাই দেহের ওজন কমাতে রোদের ভূমিকা অপরিসীম।
চুল পড়া রোধ করেঃ প্রায় মহিলাদের চুল পড়ে যায় এর অন্যতম কারণ হচ্ছে চুলে ভিটামিন ডি এর অভাব আর রৌদ্রে যথেষ্ট পরিমাণে ভিটামিন ডি পাওয়া যায়। সকালে রোদ হচ্ছে মিষ্টির রোধ তাই সকলে ঘুম থেকে উঠে রৌদ্রে দাঁড়ালে যথেষ্ট পরিমাণে ভিটামিন ডি পাওয়া যায়। যা চুলের জন্য খুবই উপকারী।
হাইপার টেনশন থেকে মুক্ত করেঃ হাইপার টেনশন হচ্ছে এমন এক রোগ যা আমাদের মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায়। শরীরের যখন নাইট্রিক অক্সাইডের ঘাটতি দেখা দেয় তখন এ হাইপারটেনশন সমস্যাটি দেখা দেয়। এ সমস্যা থেকে সমাধানের জন্য আমাদের প্রয়োজন যথেষ্ট পরিমাণের সূর্যের আলো। তাই সকালে ঘুম থেকে উঠে সূর্যের আলো গেলে হাইপার টেনশন হওয়ার থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
হাড় গঠনের সাহায্য করেঃ আমরা জানি ভিটামিন ডি এর অভাবে হাড়ের সমস্যা হয় । এ সমস্যা দূরীকরণের জন্য সূর্যের আলো অত্যন্ত প্রয়োজন।। সূর্যের আলো থেকে যথেষ্ট পরিমাণে ভিটামিন ডি পাওয়া যায়। আর ভিটামিন ডি হার গঠনে যথেষ্ট পরিমাণ ভূমিকা রাখে।
ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করেঃ আমরা সবাই জানি সূর্যের আলো ত্বকের জন্য কত ক্ষতি করে। কিন্তু সূর্যের আলো ত্বকের জন্য সবচাইতে উপকারী। এই উপকারিতা গ্রহণ করতে হলে প্রত্যেকদিন সকালে সূর্য ওঠার সাথে সাথে ত্বকে লাগলে ত্বকে উজ্জ্বলতা অনেকটা বৃদ্ধি পায়।
দৃষ্টিশক্তি বাড়ায়ঃ ম্যাকুলার ডিজেনারেশন কারণে অনেকেই দৃষ্টিশক্তি কমে যায়। আর ভিটামিন ডিম্যাকুলার ডিজেনারেশন এর অভাব দূর করেন। ফলে আমাদের দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি পায়। দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধির জন্য সকালে সূর্যের আলো সবচেয়ে উপকারী।
ঘুম ভালো হয়ঃ সূর্যের আলো আমাদের দেহের হরমোন বৃদ্ধি করে ফলে আমাদের ঘুম ভালো হয়। আমাদের শরীরের মিলোটোনিন ও শিরোটোনিন এর ভারসাম্য বজায় থাকে ফলে আমাদের ঘুমের কোন ক্ষতি হয় না। ঘুমানোর ক্ষেত্রে সকলের সূর্যের আলো সবচেয়ে উপকার।
সকালের রোদে কোন ভিটামিন থাকে
সকালে রোদে অনেক উপকারিতা রয়েছেন এবং সকালে রোদে যথেষ্ট পরিমাণে ভিটামিন রয়েছে। আমরা অনেকে জানি রৌদ্রে ভিটামিন ডি পাওয়া যায়। ভিটামিন ডি এর কারণে তার সাথেও রয়েছে ক্যালসিয়াম ম্যাগনেসিয়াম আয়রন যা আমাদের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার ক্ষেত্রে যথেষ্ট পরিমাণে ভূমিকা রাখে। তাই সকালের রোদ্রে যথেষ্ট পরিমাণে ভিটামিন ডি পাওয়া যায়।
গায়ে রোদ লাগলে ভালো কেন
আপনারা অনেকে জানতে চেয়েছেন গায়ে রোদ লাগলে ভালো হয় কেন। কারণ দেহ মনকে সুস্থ রাখতে হলে গায়ে রোদ লাগা সবচাইতে উপকারী। সঠিকভাবে সূর্যের আলো গায়ে পড়লে দেহে হরমোনের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। যা আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী। এমন একটি হরমোন যার নাম হচ্ছে এন্ডোর্ফিন।এন্ডোর্ফিন কারণে শরীরে যত প্রকারের ব্যথা রয়েছে তা ভালো হয়ে যায়। এমন তুই ঘুম ভালো হয় ডিপ্রেশন থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। দেহের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায় ইত্যাদি উপকার পাওয়া যায়।
রোদের অপকারিতা
সবকিছুরই উপকারের পাশাপাশি কিছু ক্ষতিকর দিক রয়েছে। রোদ আমাদের যেমন উপকার করে ঠিক তেমনি যথেষ্ট পরিমাণ ক্ষতিও করে থাকে। কোন কাজের কারণে রৌদ্রে বেশিক্ষণ থাকলে আমাদের অনেক সমস্যা দেখা দেয় এবং অনেক রোগের সম্মুখীনও হতে হয়। রোদে অনেকক্ষণ থাকলে যে সকল অপকারিতা দেখা দেয় সেগুলো হচ্ছে।
চোখের ক্ষতিঃ চোখে যখন অতিরিক্ত সূর্যের আলো পরে তখন সূর্যের আলট্রাভায়োলেট অতিবেগুনি রশ্মি চোখের ক্ষতি করে। চোখের কর্নিয়ার ঘোলাটে হয়ে যায় এবং অনেক সময় অফ্ঝা দেখা দেই।
ক্লান্তিঃ প্রচন্ড রোদের কারণে যারা মাঠে কাজ করে তারা প্রচুর ক্লান্ত হয়ে যায়। এমনকি তারা বেশিক্ষণ কাজ করতে পারে না। প্রচন্ড রোদের কারণে শরীর থেকে ঘাম ঝরতে থাকে ফলে শরীরে পানি ও লবণের ঘাটতি দেখা দেয়।
হিট স্ট্রোকঃ হিট স্ট্রোপ এমন একটি রোগ যা প্রচন্ড রোদের কারণে এবং ক্লান্তির কারণে এটি হয়ে থাকে। শরীর যখন মারাত্মক ক্লান্ত হয়ে যায় তখন একজন ব্যক্তি মৃত্যুর পর্যায় পর্যন্ত চলে যায়। হিট স্ট্রোকার কারণে একজন ব্যক্তির ডেটের তাপমাত্রা বেড়ে যায় ফলে ওই ব্যক্তিটি অজ্ঞান হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
ত্বকের ক্যান্সারঃ সবচাইতে মারাত্মক ও ভয়াবহ রোগ হচ্ছে ত্বকের ক্যান্সার। সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি দেহের ত্বকের যথেষ্ট পরিমাণে ক্ষতি করেন। একজন মানুষের বয়স বাড়ার সাথে সাথে তার এই সমস্যা দেখা দিতে পারে।
লেখকের মতামত
আজ আমি আপনাদের সামনে রোদের বিষয় নিয়ে অনেক বিষয় উপস্থাপন করেছেন। রোদের উপকারিতা ও অপকারিতা এমনকি রোদে কতক্ষণ থাকলে ত্বক ভালো থাকেন ইত্যাদি বিষয় আপনাদের সামনে তুলে ধরেছেন। এই আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনারা উপকৃত হন তাহলে অবশ্যই একটি কমেন্ট ও শেয়ার করে দেবেন ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url