চিয়া সিড কিডনির জন্য কতটা ভাল এ সর্ম্পকে বিস্তারিত জানুন
চিয়া সিড কিডনির জন্য কতটা ভাল সে সম্পর্কে আপনারা অনেক খোঁজাখুঁজি করছেন। আজকের আর্টিকেলের মূলকথা হচ্ছে চিয়া সিড কিডনির জন্য কতটা ভাল। আপনারা যদি এ সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে চান তাহলে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি খুব মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে।
প্রিয় পাঠক এছাড়াও চিয়া সিডের উপকারিতা ও অপকারিতা এটি খেলে ওজন কমে না বাড়ে বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জানতে পারবেন।
ভূমিকা
চিয়াসিট মধ্য আমেরিকা ও মেক্সিকোর মরুভূমি অঞ্চলে চাষ করা হয়। চিয়া সিড হচ্ছে পুদিনা পরিবারের ছোট এই গাছটির বীজ । বাদামি ,সাদা, ও কালো রঙের চিয়া সিডগুলো আকারে খুবই ছোট, কিছুটা তিলের মতো। চিয়াসিটকে যদি পানিতে ভিজানো হয় তাহলে অনেক বড় হয়। সিএসইড একটি মহা ঔষধের মত কাজ করে। এটি প্রতিদিন সকাল বেলা খালি পেটে খেলে খুবই উপকার করে। বিভিন্ন ধরনের কষ্টকাঠিন্য, হৃদপিণ্ড সমস্যা, ক্যান্সার, কিডনি ইত্যাদি রোগের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
চিয়া সিড কিডনির জন্য কতটা ভাল
চিয়া সিট খাওয়া যেমন কিছু উপকারী রয়েছে তেমন কিডনি রোগীদের জন্য চিয়া সিট খাওয়ার বেশ কিছু ঝুঁকি রয়েছে। খাওয়ার জন্য অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী খেতে হয়। কারণ রয়েছে অতিরিক্ত পরিমাণে ফসফরাস ও পটাশিয়াম । যা কিডনির জন্য খুবই ঝুঁকির স্বরূপ। অতিরিক্ত ফসফরাস ও পটাশিয়াম কিডনি খুব সহজে অপসারণ করতে পারেনা।
কিডনি রোগীদের জন্য চিএস সিট খাওয়ার বেশ কিছু নিয়ম রয়েছে।, নিয়মগুলো হলঃ
- চিয়া সিট খাওয়ার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
- চিয়া সিড খাওয়ার আগে পানিতে ভালো করে ভিজিয়ে রাখা উচিত।
- সিএসসি গোটা করে না খেয়ে গুড়া করে খাওয়া সবচেয়ে ভালো।
- প্রতিদিন ১ চা চামচ এর বেশি চিয়াসিট খাওয়া মোটেই উচিত নয়।
- চিয়াসিড কিডনি রোগের জন্য বেশ কিছু উপকারিতা রয়েছে তবে খাওয়ার আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী সঠিক নিয়মে চিয়া সিট খাওয়া সবচাইতে ভালো।
চিয়া সিড এর উপকারিতা
চিয়াসিড এর উপকারিতা অনেক। এটি আমাদের দেহকে বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে দেহকে সুস্থ রাখে। আমরা যদি প্রতিদিন ৮৬ খেয়ে থাকে তাহলে আমাদের বেশ কিছু উপকারিতা রয়েছে।
এখানে চিয়া বীজের 12 টি স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে:
পুষ্টিতে সমৃদ্ধ: চিয়াসিডে ফাইবার, প্রোটিন, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং ফসফরাস সহ বেশ কিছু পুষ্টি রয়েছে।
হার্টের জন্য : চিয়া সিডে ওমেগা -3 ফ্যাটি অ্যাসিড কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে, রক্তচাপের ঝুঁকি কমাতে এবং সামগ্রিক হৃদরোগের স্বাস্থ্যকে ভালো রাখে।
ওজন কমাতে: চিয়া সিড উচ্চ ফাইবার উপাদান বেশি থাকে এবং ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে সহায়ক ভূমিকা রাখে, ওজন নিয়ন্ত্রণে নিয়ন্ত্রণ করে এবংস্বাস্থ্য ভালো রাখে।
বদ হজম : চিয়া সিড দ্রবণীয় ফাইবার একটি স্বাস্থ্যকর পাচনতন্ত্রকে জোরো করে, কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা সমাধান করে এবং নিয়মিত মলত্যাগের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
রক্তে শর্করার নিয়ন্ত্রণ: চিয়া সিড রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণের সহায়ক ভূমিকা পালন করেন, যা ডায়াবেটিস বা ইনসুলিন ব্যক্তিদের জন্য খুবইউপকারী । তাই ডায়াবেটিস রোগীর জন্য চিয়া সিট খুবই উপকারী।
হাড়ের সমস্যা : চিয়া সিড রয়েছে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং ফসফরাস সমৃদ্ধি কিছু পুষ্টি উপাদান, যা হাড়কে শক্তিশালী ও মজবুত করে। নিয়মিত চিয়া সি ট খেলে হাড়ের সমস্যা দূর হয়। কারণ বর্তমানে অনেক মানুষের পায়ের হাড়ে বেশ কিছু সমস্যা দেখা দেয়। তার মধ্যে সবচেয়ে কমন সমস্যা হচ্ছে হাড়ের মধ্যে ক্যালসিয়ামের সমস্যা। যা চিয়াসিট এ সমস্যার সমাধানের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
শক্তি বৃদ্ধি: চিয়াসিড থাকা কার্বোহাইড্রেট এবং পুষ্টির ধীরে ধীরে দেহের শক্তিকে বৃদ্ধি করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।চিয়াসিটে থাকা কার্বোহাইড্রেট দেহে শক্তি যোগায়।
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট : চিয়া সিড অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা দেহের কোষকে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস থেকে রক্ষা করে এবং দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি প্রভাব: চিয়াসিডের ওমেগা -3 , ফ্যাটি অ্যাসিডের অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি রয়েছে, যা শরীরের প্রদাহ ঝুঁকি কমাতে সহায়ক ভূমিকা রাখে।
ত্বকের ক্ষেত্রে: চিয়া সিড থাকা পুষ্টি উপাদান ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। এটি প্রতিদিন খেলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায় ত্বককে মসৃণ রাখে বিভিন্ন রোগ জীবাণু থেকে রক্ষা করে।
পেশী শক্তি বৃদ্ধি: চিয়া সিডে থাকা প্রোটিন উপাদান পেশী শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
গ্লুটেন-মুক্ত বিকল্প: চিয়া সিড প্রাকৃতিকভাবে গ্লুটেন-মুক্ত, সিলিয়াক রোগে আক্রান্ত রোগীর জন্য একটি নিরাপদ এবং পুষ্টিকর বিকল্প তৈরি করে।
আপনার প্রতিদিনের খাবার সাথে চিয়া সিড অন্তর্ভুক্ত থাকলে আপনার সামগ্রিক স্বাস্থ্য এবং সুস্থতা উন্নতির ক্ষেত্রে সহজ এবং কার্যকর উপায় হতে পারে।
চিয়া সিড খাওয়ার অপকারিতা
চিয়া সিড বেশ কিছু উপকারিতা থাকলেও এর অপকারিতা ও কম নয়। ৮৬ খাওয়ার আগে আমাদের অবশ্যই এর অপকারিতার দিকে খেয়াল রাখতে হবে। আমরা জানি অতিরিক্ত কোন কিছুই ভালো না। তাই আমাদের চিয়া সেট খাওয়ার আগে উপকারিতার পাশাপাশি কিছু অপকারিতার কথাও মনে রাখতে হবে।
- ক্যান্সার রোগীর জন্য চিয়া সীড যেমন উপকারী তেমনি ক্ষতিকর রয়েছে তাই অতিরিক্ত পরিমাণেচিয়াসিড খাওয়া উচিত নয়।
- চিয়াসিড দেহের ওজন কমায় এটা ঠিক কিন্তু অতিরিক্ত ওজন কমালে দেহের প্রচুর ক্ষতিও হয় তাই বেশি পরিমাণে চিয়সিড খাওয়া উচিত নয়।
- দেহের রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে যেমন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তেমনি অতিরিক্ত সেবনের ফলে রক্তচাপের পরিমাণ কমে যাওয়া সম্ভাবনা বেশি থাকে। ফলে মারাত্মক সমস্যা দেখা দিতে পারে।
- শুকনো চিয়াসিড অনেক সময় গলায় আটকে যেতে পারেন তাই চিয়া সিড খাওয়ার আগে অবশ্যই ১৫ থেকে ২০ মিনিট ভিজে রাখা উচিত।
ওজন কমাতে চিয়া সিড খাওয়ার নিয়ম
ওজন কমানোর ক্ষেত্রে চিয়াসিড গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যাদের অতিরিক্ত ওজন বেড়ে যায় তাদের জন্য এ খাবার খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। আমরা যদি নিয়ম মাফিক চিয়া সিট খায় তাহলে ওজন খুব দ্রুতই কমে যাবে। খাওয়ার বেশ কিছু নিয়মও রয়েছে। জিও সিড ২৫থেকে ৩০ মিনিট ভিজিয়ে রাখতে হবে। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে চিয়সিড খাওয়া সবচাইতে বেশি উপকারী। সকলের খালি পেটে এবং ঘুমানোর আগে রাত্রে ২ চা চামচ চিয়সিডের সাথে কিছু পরিমাণের লেবুর রস মিশিয়ে খেলে খুব তাড়াতাড়ি দেহের ওজন কমে যায়।
চিয়া সিড এর বাংলা নাম
চিয়া সিড কে আরবিতে বলা হয় বাযুর শিয়া।যেহেতু চিয়াসিড বাংরাদেশে জন্মায় না । এটি বর্হিবিশ্বের অনেক দেশে পাওয়া যায়। এটি হচ্ছে এক ধরনের ঔষধি বীজ। এই বিজের জন্ম মেক্সিকোতে। এটি দেখতে ছোট সাদা, কালো, বাদামি রং এর হয়ে থাকে। তকে অনেকেই মনে করেন যে চিয়া হচ্ছে এক ধরনের ঘাসের বীজ। তাই চিয়াসিড কে বাংলা বলা হয় চিয়া বীজ।
চিয়া সিড খেলে কি ওজন বাড়ে
চিয়া সিড খেলে ওজন বাড়ে না। নিয়মিত চিয়াসিড খেলে দেহের ওজন ভারসাম্য রাখে। দেহকে সুস্থ রাখে। বিভিন্ন রোগ জীবাণু থেকে রক্ষা করে। তাই চিয়াসিড খেলে ওজন বাড়ে না।
চিয়া সিড কতক্ষণ ভিজিয়ে রাখতে হয়
আসলেই চিয়া সিট হচ্ছে এক ধরনের শুকনো জাতীয় বীজ। একে খেতে হলে অবশ্যই ভিজিয়ে খেতে হবে। চিয়াসিড ভিজিয়ে খাওয়া সবচেয়ে বেশি উপকারী। তাই খাওয়ার আগে চিয়াসিড কমপক্ষে ২৫ থেকে ৩০ মিনিট ভিজিয়ে রাখতে হবে। চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা মনে করেন যে, চিয়াসিড ২৫ থেকে ৩০ মিনিট ভিজিয়ে রেখে খেলে স্বাস্থ্যর জন্য সবচেয়ে বেশি উপকারী।
লেখক এর মতামত
চিয়াসিডআসলেই অনেক উপকারী একটি বীজ যা যা মেক্সিকো শহরে এই বীজের জন্ম । যা আমাদের দেহের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দূর করে। এটি যদি আমরা প্রতিদিন নিয়ম করে খেয়ে থাকি তাহলে আমাদের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে। আমি আপনাদের সামনে চিয়া সিডের বিভিন্ন উপকারিতা অপকারিতা সহ অনেক বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি। যদি এ আলোচনার মাধ্যমে আপনাদের কোন উপকার হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করবেন এবং শেয়ার করে দিবেন
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url