বাংলা নববর্ষের ইতিহাস সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন

বাংলা নববর্ষ ইতিহাস সম্পর্কে আপনারা অনেক খোঁজাখুঁজি করতেছেন। আজকে এ আর্টিকেলের কথা হচ্ছে বাংলা নববর্ষের ইতিহাস সম্পর্কে। আপনারা যদি বাংলা নববর্ষের ইতিহাস সম্পর্কে জানতে চান তাহলে এই আর্টিকেলটি খুব মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে।
প্রিয় পাঠক বা দর্শক বাংলা নববর্ষের ইতিহাস ছাড়াও কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় রয়েছে বাংলা নববর্ষ চালু করেন কে সহ আরো কিছু বিষয় সম্পর্কে জানতে হলে আর্টিকেল গুলো ভালোভাবে পড়তে হবে।

ভূমিকা

বাংলা নববর্ষ বাঙ্গালীর জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বহন করে। জীবন ধারার মধ্যে নববর্ষ নিয়ে আসে নতুন শুর ও উদ্দীপনা । বিগত বছরের সব দুঃখ বেদনাকে একরাশি হাসি , আনন্দ আর গান দিয়ে ভুলিয়ে দিয়ে যায় বাংলার নববর্ষ । নববর্ষ প্রায় প্রাচীনকাল থেকেই শুরু হয়ে আসছে । প্রাচীনকাল থেকে জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে একটি বাঙালির আনন্দময় উৎসব হিসেবে পরিচিত। তাই বাংলা নববর্ষ বাঙালির জাতীয় জীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎসব।

বাংলা নববর্ষের ইতিহাস

বাংলা নববর্ষ ইতিহাসের রহস্য ঘেরা। অনেক ইতিহাসবিদগণ মনে করেন বাংলার সুলতান হোসেন শাহ বাংলা সনের প্রবর্তক। আবার অনেকে মনে করেন দিল্লি সম্রাট আকবর বাংলা সনের প্রচলন করেন। তার নির্দেশেই আমির ফতুল্লা সিরাজী পূর্বে প্রচলিত হিজরী ও চন্দ্র বছরের সমন্বয়ে সৌর বছর প্রচলন করেন। তবে সুলতান হোসেন শাহের সময় ৯০৩ হিজরী বাংলা সনের প্রচলিত হলেও সম্রাট আকবরের সময় ৯৬৩ হিজরি থেকে এর সর্বভারতীয় রূপ লাভ করে ।

তখন থেকে বাঙালি সাংস্কৃতি সাথে সম্পর্কিত বাঙালি জাতির একান্ত নিজস্ব অব্দ। বিভিন্ন বইয়ের তথ্য মতে ১৫৮৪ খ্রিস্টাব্দে ১০ ১১ মার্চ থেকে বাংলা সাল গণনা শুরু হয়। বাংলা নববর্ষ ইংরেজি মাসের ১৪ই এপ্রিলকে ধরা হয়। বাঙালির প্রাচীনকাল থেকে নববর্ষ উদযাপন করে আসছে। তখন বছরের শুরু হতো অগ্রহায়ণ মাস থেকে এটি ছিল ফসল কাটার সময় সরকার রাজস্ব ও ঋণ আদায়ের এটি ছিল যথার্থ সময়।

পরে বাংলা সনের প্রচলন হলে বৈশাখ মাস থেকে বর্ষ গণনা শুরু করে বাঙালিরা পহেলা বৈশাখে বাংলা নববর্ষ উদযাপন করেন বাংলাদেশের নববর্ষ উদযাপনের নতুন যাত্রা বর্তমানে আমাদের সমাজের রাষ্ট্র হবে নববর্ষ পালন করা হয়। এ সময় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় অঙ্গনের মঙ্গল শোভাযাত্রা উদযাপন করে। বাংলা মাসের নাম করণ করা হয় বিভিন্ন তারকারাজির নাম অনুসারে বৈশাখ জ্যৈষ্ঠ আষাঢ় শ্রাবণ ভাদ্র আশ্বিন কার্তিক অগ্রহায়ণ পৌষ মাঘ ফাল্গুন চৈত্র এই বাংলা বারটি মাস বিভিন্ন অংশ থেকে নেওয়া হয়েছে। সম্রাট শাহজাহান ৭ দিনে হয় ১ সপ্তাহ ভিত্তিক বাংলার নামকরণের কাজও করেন।

বাংলা নববর্ষের তাৎপর্য

বাঙালি নববর্ষের উৎসব নির্মল আনন্দের উৎসব ধারা হিসেবে নেওয়া হয়েছে। ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে এটি আমাদের জাতীয় উৎসব হিসেবে ধরা হয় নববর্ষের সামাজিক সাংস্কৃতি বিভিন্ন অনুষ্ঠান পালনের মাধ্যমে এই দিনটি পার করা হয়। বিভিন্ন ধর্মের মানুষ বাংলা নববর্ষকে একটি কল্যাণময় দিন হিসাবে মনে করেন।
আমাদের ঐতিহ্য ও সাংস্কৃত চেতনা প্রত্যক্ষ করে এই বাংলা নববর্ষের মাধ্যমে আমাদের অবশ্য উদযাপনের আনন্দ বিস্তার আছে। তাই বাঙ্গালীর সারা জীবনের আনন্দ পরশ হিসেবে ধরা হয়। বিগত দিনের সমস্ত গ্লানি মুছে দিয়ে পাওয়া না পাওয়া সব হিসাব চুকিয়ে প্রতিবছরে পহেলা বৈশাখ পালন করা হয় । 

এই দিনে বিভিন্ন ব্যবসায়ীরা তাদের শুভ হালখাতা করে থাকে ঘরে ঘরে বিভিন্ন পিঠাপুলি করে বাঙালিরা পান্তা ভাত, ইলিশ মাছ ভাজা, ভর্তা ইত্যাদি খেয়ে থাকেন। মহা ধুমধামে শুরু হয় বাংলা নববর্ষের বর্ষবরণ। সবাই গেম ওঠেন রবীন্দ্রনাথের গান এসো, এসো ,এসো হে বৈশাখ তাপ নিঃশ্বাস বায়ে মুমূর্ষুরে দাও উড়ায়ে, বৎসরের আবর্জনা-দূর হয়ে যাক। 

বাংলা নববর্ষের অন্যতম আকর্ষণীয় হচ্ছে বৈশাখী মেলা। মেলায় বিভিন্ন ধরনের বাংলাদেশের বড় বড় সর্বজনীন উৎসব জাতীয় ধর্ম নির্বিশেষে সব মানুষ এক ত্রিত হয় এবং এই মেলাতে গ্রাম বাংলা সংস্কৃতি কর্মকাণ্ড এক পরিচিতি তুলে ধরে। বাউল ,মারফতি ,মুর্শিদি ভাটিয়ালি সহ বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের লোকজন মেলার আকাশ বাতাস মুখরিত হয় যাত্রা ,নাটক ,পুতুল নাচ, গান বিভিন্ন সামগ্রিক তালপাতার পাখা কুটির শিল্প যা বিভিন্ন সামগ্রিক শিশু কিশোরদের খেলনা, মহিলাদের কাজের বিভিন্ন নকশা এই মেলায় নামে পহেলা বৈশাখের। 

সবচাইতে ভালো লাগে সকলেই নতুন পোশাক পড়ে বছরকে তারা সুখময় করে তোলে। ১৯৭২ সালের পর থেকেই রহমান ও বটমূলে বাংলা নববর্ষের বর্ষবরণ জাতীয় উৎসব স্বীকৃতি লাভ করে। ১৯৮০ সাল থেকে বৈশাখী মেলা মঙ্গল শোভাযাত্রার মাধ্যমে এই দিনটি পালিত হয় ছড়িয়ে পড়ে মানুষের অন্তরে অন্তরে প্রতিবছর তাই কোটি কোটি বাঙালির অপেক্ষায় থাকে বাংলা এই নববর্ষের জন্য। 

এই মঙ্গল শোভাযাত্রা শুরু করেন সর্বপ্রথম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা ১৯৮৯ সালে পহেলা বৈশাখের দিন সকালে টিএসসি শাহবাগে মানুষের উপচে পড়া ভিড় থেকে শুরু হয় মঙ্গল শোভাযাত্রা। বাংলা নববর্ষ কে সদরে গ্রহণ করার জন্য সকলে নানা রঙ বেরঙের পোশাক আশাক মুখোশ আলপনা করে বের হয়ে আসে। তরুণ বৃদ্ধ সবাই মেতে উঠে মঙ্গল শোভাযাত্রায়।

বাংলা নববর্ষ চালু করেন কে

বাংলা নববর্ষ সময় কৃষকদের ঘাগড়া পরিষদ করতে বাধ্য করা হতো। সে সময় কৃষকদের উপর অন্যায় অত্যাচার ও জুলুম করা হত। তারা যদি ঠিকমতো খাজনা না দিত তাহলে তাদের উপর অন্যায় অত্যাচারও করা হতো। মুঘল সম্রাট আকবর সর্বপ্রথম খাজনা আদায়ের জন্য বাংলা নববর্ষ চালু করেন। সম্রাট আকবর যখন সিংহাসন আহরণ করেন ১৫৫৬ সালের তখন তিনি খাজনা আদায়ের লক্ষ্যে এই বাংলার নববর্ষ চালু করেন।

বাংলা নববর্ষের প্রতিবেদন

২৭শে মার্চ ২০২৪
বরাবর
প্রধান শিক্ষক
নাচোল উচ্চ বিদ্যালয়
নাচোল, চাঁপাইনবাবগঞ্জ
বিষয় পহেলা বৈশাখী উদযাপন সম্পর্কে প্রতিবেদন।
জনাব,
সম্প্রীতি নাচোল উচ্চ বিদ্যালয় পহেলা বৈশাখ উদযাপন সম্পর্কে আদেশ প্রাপ্ত হয়ে নিম্নলিখিত প্রতিবেদন উপস্থাপন করছি।
উৎসাহ উদ্দীপনা সাথে পহেলা বৈশাখ উদযাপিত
পহেলা বৈশাখ বাঙ্গালীর কাছে অত্যন্ত তাৎপর্য মূলক একটি দিন। প্রতিবছরই এই দিনটি অত্যন্ত উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে পালিত হয় । জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সবাই একযোগে পালন করে থাকে। বাংলা নববর্ষ পুরাতন বছরকে বিদায় জানিয়ে নতুন বছরকে সাদরে বরণ করে নেওয়া নাচোল উচ্চ বিদ্যালয়।প্রতি বছর নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয় বাংলা নববর্ষ উদযাপনের উদ্দেশ্য। র‌্যালি সকালে নিয়ে বের হয়। র‌্যালিটি বিদ্যালয় আশপাশ এলাকায় পরিদর্শন করে । এরপরে র‌্যালি নিয়ে সবাই বিদ্যালয় অঙ্গনে উপস্থিত হয় এবং নববর্ষের ঐতিহ্যবাহী খাবার পান্তা ভাত, ইলিশ মাছের ভাজা, ভর্তা খায়। বিদ্যালয়ের সৌজন্যে এছাড়াও নানান মুখরোচক খাবারের আয়োজন করা হয় । এরপর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পর্ব শুরু হয় প্রধান শিক্ষক কামরুজ্জামান সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনার দায়িত্ব পরিচালনা করেন ভালো নববর্ষের অমর সঙ্গীত এসো হে বৈশাখ, এসো, এসো গানটির একত্রিত হয়ে কণ্ঠস্বরে পরিবেশন করে। বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা নাচ, গান, অভিনয় ,কৌতুক, আবৃত্তি সব মিলিয়ে দারুন ভাবে উপভোগ করা হয় এ অনুষ্ঠানটি। প্রত্যেকে নানান বর্ণ, নানান ভঙ্গের সেজে উপস্থিত হয় অনুষ্ঠানে নাচ-গান কবিতা আবৃত্তি অভিনয় ইত্যাদির মধ্য দিয়ে দুপুর ১:৩০ মিনিটে অনুষ্ঠানটি শেষ হয় । শিক্ষকদের সহযোগিতায় বিভিন্ন স্টলে ঘুরে প্রধান অতিথি পরিদর্শন করেন এবং সন্ধ্যা ছয়টায় সকল অনুষ্ঠান সমাপ্তি করা হয়। ছাত্র-ছাত্রীদের পাশাপাশি অভিভাবকদের আমন্ত্রণ করা হয়। সবাই স্বতঃস্ফূর্তভাবে উৎসবমুখর দিনটি পালন করে স্বাচ্ছন্দভাবে বাংলা নববর্ষ উদযাপন সম্পন্ন হয়।
নিবেদক
সামিরা খাতুন
বাণিজ্য বিভাগ
রোল নম্বর 2

উপসংহার

বাংলা নববর্ষের প্রথম দিনটি আসলে গৌরব উজ্জ্বল দিন । আমাদের জীবনের চেতনার সঞ্চালন করে পরিবর্তনের একটা বার্তা নিয়ে আসে বাংলার এই নববর্ষ । পুরাতনকে ঝেড়ে ফেলে নতুন কে গ্রহণ করা হয় এ নববর্ষের দিনে। নববর্ষের দিনে দোকানিরা নতুন হাল খাতা করে ,গ্রাহকদের মিষ্টি খাওয়ানো হয়। এবং আমাদের মানবিক মূল্যবোধ এর চেতনাকে জাগ্রত করে তোলে। তাই বাংলা নববর্ষ আমাদের জীবনে একটা গৌরব ও আনন্দময় দিন।

লেখক এর মতামত

বাংলা মাসের প্রথম দিন বৈশাখ মাস। আর এই দিনকে সকলেই সাদরে গ্রহণ করে নানা অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে। আপনারা যদি এ আর্টিকেলস টি পড়ে ভালো লাগে তাহলে অবশ্যই একটি কমেন্ট ও শেয়ার করে দিবেন ধন্যবাদ।

























































এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url