রোজা ফরজ হওয়ার শর্ত কয়টি বিস্তারিত জানুন

 রোজা ফরজ হওয়ার শর্ত কয়টি এই বিষয় নিয়ে খোঁজা খুঁজি করছেন। রোজা ফরজ হওয়ার শর্ত গুলো জানা প্রত্যেক মসুলমানের জন্য ফরজ। রোজা ইসলামের ৫টি স্তম্ভের মধ্যে একটি। আপনারা যদি রোজা ফরজ হওয়ার শর্ত কয়টি এ সর্ম্পকে জানতে চান তাহলে এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।



প্রিয় পাঠক রোজার ফরজ হওয়ার শর্তগুলো ছাড়াও আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় রোজা কি রাখা ফরজ সহ কয়েকটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। সেগুলোর সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হলে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

ভূমিকা

সাওম আরবি শব্দ যার অর্থ হল রোজা। ইসলামী শরীয়তে পরিভাষায় সাওম হলো সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত আল্লাহ সন্তুষ্ট লাভের আশায় নিয়তের সাথে পানাহার ও ইন্দ্রিয় তৃপ্তি থেকে বিরত থাকা।রমজান মাস আল্লাহর তা‘আলা এক বিশেষ নিয়ামত। সওয়াব অর্জন করার মৌসুমী। এই মাসে কুরআন মাজীদ নাযিল হয়েছে এই মাসে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ আমল রয়েছে যেগুলো পালন করার মাধ্যমে আমরা জান্নাতে যেতে পারি জাহান্নাম থেকে মুক্তি পেতে পারি।

রোজা রাখা কি ফরজ

প্রাপ্তবয়স্ক প্রত্যেকটি মানুষের রোজা রাখা ফরজ।  রোজার মাসে আল্লাহ তাআলা আমাদের সকল গুনাহ মাফ করে দেয়। তাই প্রত্যেক মুসলমানের জন্য রোজা ফরজ। আরবি হিজরী দ্বিতীয় বর্ষে মুসলমানের জন্য রোজা ফরজ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এরপর থেকে সারা বিশ্বব্যাপী রোজা পালন করে। আরবিতে রোজাকে বলা হয় সাওম।

আর যারা রোজা পালন করে তারা কে বলা হয় সিয়াম। সিয়াম আরবী শব্দ যার বাংলা অর্থ হল কোন কাজ থেকে বিরত থাকা। বিভিন্ন ধরনের খারাপ কাজ পানাহার অপ্রয়োজনীয় কাজ থেকে বিরত থাকা ইত্যাদি হচ্ছে সাওম। ইসলামের বিধিবিধান অনুযায়ী প্রাপ্তবয়স্কর সকল মুসলমানের জন্য রমজান মাসে রোজা রাখা।

রোজা ফরজ হওয়ার শর্ত কয়টি

রোজা ফরজ হওয়ার বেশ কয়েকটি শর্ত রয়েছে । তাদের মধ্যে হলঃ
  • মুসলিম হতে হবে ।কারণ অমুসলিমের জন্য রোজা ফরজ নয়।
  • প্রাপ্ত বয়স্ক হতে হবে। অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছেলে বা মেয়েদের জন্য রোজা ফরজ নয় অর্থাৎ ছেলে বা মেয়ে বয়স 10 বছর হতে হবে।
  • পাগলদের জন্য রোজা ফরজ নয় অর্থাৎ পূর্ণ জ্ঞানের অধিকারী হতে হবে।
  • মহিলাদের ঋতুস্রাব বা সন্তান-সন্তানী জন্মদানের পরবর্তীতে পবিত্র হলে তার জন্য রোজা ফরজ
  • যারা মুনাফিক তাদের জন্য রোজা ফরজ নয়।

রোজা ভঙ্গের কারণ

রোজা ভাঙ্গা বিভিন্ন ধরনের কারণ রয়েছে । সেগুলো হলঃ
  • রোজা অবস্থায় বমি করলে
  • ইচ্ছাকৃতভাবে রোজা অবস্থায় পানাহার করলে পানাহার করলে
  • রোজা অবস্থায় কোন তরল জিনিস শরীরে প্রবেশ করালে
  • হস্তমৈথুন করলে
  • রোজা থাকা অবস্থায় কুলি করা পানি পান করলে
  • নেশা জাতীয় কোন দ্রব্য পান করলে
  • রোজা থাকা অবস্থায় স্ত্রীর সাথে সহবাস করলে
  • রোজা থাকা অবস্থায় নারীদের ঋতুস্রাব হলে
  • সূর্যাস্তের আগে পানাহার করলে রোজা ভেঙে যায়
  • দাঁতের মধ্যে কোন কিছু থাকলে রোজা থাকা অবস্থায় যদি বের করা হয় এবং তা যদি রক্ত বের হয় তাহলে রোজা ভেঙে যায়
  • রোজা থাকা অবস্থায় কোন দ্রব্য বা কোন খাবার যদি মুখের মধ্যে নিয়ে রাখে তবে রোজা ভেঙে যায়
  • সারাদিন পবিত্র না থাকলে রোজা ভেঙে যায়
  • রাত আছে মনে করে পানাহার করলে

রোজার সামাজিক গুরুত্ব

ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে রোজা একটি। অর্থাৎ রোজা হচ্ছে তিন নাম্বার। আল্লাহ তাআলার রোজা কে একটি বিশেষ মর্যাদা দিয়েছেন। রোজা হচ্ছে একটি রহমতের মাস। যা বিভিন্ন গুনাহ থেকে বিরত রাখেন। রোজা পালনের মাধ্যমে সমাজের বিভিন্ন মানুষের মাঝে পারস্পারিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এবং রোজা ফলে সমাজের মানুষের মধ্যে পারস্পরিক সহানুভূতি ও সহমর্মিতা সৃষ্টি হয়।
রোজা পালন করে একজন ব্যক্তি অনার থাকার কারণে সে অন্য জনের অনাহারের কষ্ট, ক্ষুধার জ্বালা খুব সহজেই বুঝতে পারে। ক্ষুধা ও পিপাসার কাতরতা হতে পারে তা সে উপলব্ধি করতে পারে। রোজা আদায়ের মাধ্যমে একজন ক্ষুধার্ত মানুষের যন্তনা বুঝতে পারে। সমাজের যারা অনাহার থাকে তাদের কষ্ট বুঝতে পারে। 

রোজা পালনকারী ব্যক্তি অন্যায় অবিচার খারাপ কথাবার্তা পরিহার করে মারামারি থেকে দূরে থাকে। সমাজে শান্তি বিরাজমান করে রোজা পালনের মাধ্যমে একে অন্যেকে সাহারি ইফতার করাই এবং অভাবী লোকদের বিভিন্নভাব সাহায্য সহযোগিতা করে। ফলে এতে সামাজিক গুরুত্ব বৃদ্ধি পায় একে অন্যের পরস্পরের মধ্যে ভাতৃত্ববোধ সৃষ্টি হয়। সামাজিক বন্ধন ও আরো শক্তিশালী হয় আল্লাহর নিকট জান্নাত লাভের আসা করেন রোজার মাধ্যমে মানুষের সামাজিক গুরুত্ব বেড়ে যায়।

রমজানের নৈতিক গুরুত্ব কি?

রোজা মহান আল্লাহ তাআলার একটি বিশেষ নিয়ামত। রমজান মাসে রোজা পালন করা একটি নৈতিক দায়িত্ব। মুসলমানের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে রোজা একটি। রমজান মাসে রোজা রাখার মাধ্যমে সামাজিক বিভিন্ন উপকার ছাড়াও নিজেরও অনেক উপকার রয়েছে। রমজানের মাধ্যমে একজন মুসলমানের নৈতিক গুরুত্ব বেড়ে যায় বিভিন্ন খারাপ কাজ থেকে দূরে থাকে তাদের কাজের লেনদেন খুব সতর্কতার সাথে করে। 

রমজান মাসে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা যায়। রোজার মাধ্যমে মানুষের মনের তাকওয়া অর্থাৎ আল্লাহর ভীতি আল্লাহর প্রতি ভালোবাসা সৃষ্টি হয়। রমজান মাসে ইফতার সামাজিক ভ্রাতৃত্ববোধ সৃষ্টি করে। ইফতারের মাধ্যমে বিভিন্ন দারিদ্র্য মানুষদের পানাহারের ব্যবস্থা করা হয়। এবং একে অন্যের সাথে পারস্পরিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

রমজান মাসের ফজিলত

রমজান মাস আরবি মাসের ৯ নম্বর মাস এ মাসে মুসলমানেরা রোজা পালন করে। আল্লাহর সন্তুষ্ট লাভের জন্য প্রত্যেক মুমিন রোজা পালন করে। রমজান মাসের মধ্যে একটা বিশেষ রাত রয়েছে সেটি হচ্ছে শবে কদর। রমজান মাসের ২৬ তারিখ দিবাগত রাত্রে এই রাতটি পালন করা হয়। এই নামাজ বেতের নামাজের পূর্ব পর্যন্ত অর্থাৎসুবহে কাজের পর্যন্ত এ নামাজের সময় থাকে । এই রাতে কুরআন তেলাওয়াত জিকি দুরুদ শরীফ ইস্তেগফার, নফল ইবাদত ইত্যাদি সমস্ত রাত জাগ্রত থেকে অসংখ্য সওয়াব পাওয়া যায়। এই রাত্রে দুই রাকাত করে নফল নামাজ আদায় করতে হয়।

লেখকের মন্তব্য

রমজান মাসে রোজার ফরজ সহ রোজার বিভিন্ন কারণে ভেঙে গেলে বা রোজা ফরজ হওয়ার শর্ত ইত্যাদি বিষয় সম্পর্কে আপনাদের অবগত করেছি। আপনারা যদি এই আর্টিকেলটি পড়ে উপকৃত হন তাহলে অবশ্যই কমেন্ট বা শেয়ার করে দিবেন। এবং কোথাও যদি কোন ভুল ত্রুটি থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট এর মাধ্যমে জানাবেন। ধন্যবাদ!

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url