সকালে খেজুর খাওয়ার উপকারীতা সর্ম্পকে বিস্তারিত জানুন
সকালে খেজুর খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আপনারা অনেকেই জানতে ইচ্ছুক। আজকে এই আর্টিকেলের মূল কথা সকালে খেজুর খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে। যদি আপনারা এ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়েন তাহলে বিস্তারিত জানতে পারবেন।
প্রিয় পাঠক খেজুর খাওয়ার নিয়ম সহ আরো বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। সেগুলো সম্পর্কে জানতে হলে আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ করতে হবে।
ভূমিকা
খেজুর একটি পুষ্টিকর ফল। সারাবছর পাওয়া গেলেও রমজান মাসে এটি খুব সহজেই পাওয়া যায় আমাদের দেশের অনেক জায়গায় এখন খেজুরের চাষ করা হয় তবে বিশেষ করে সৌদি কিংবা মধ্যপ্রাচ্যে খেজুর আমরা বেশি খেয়ে থাকি । খেজুরের পুষ্টি গুনাগুন অনেক যা আমাদের দেহের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ এরশাদ এতই মিষ্টি যেন মনে হয় চিনি ও মধুর মিশ্রণে গঠিত। খেজুরে আছে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান ভিটামিন ও খনিজ । এতে আছে ট্যানিনস নামক পলিফেনোলিক এন্টি-অক্সিডেন্ট। যা আমাদের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
সকালে খেজুর খাওয়ার উপকারিতা
সকালে ঘুম থেকে খেজুর খেলে স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী এর সাথে চুল ও ত্বকে সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে অনেক চিকিৎসক মনে করে প্রতিদিন সকালে খেজুর খেলে বেশ কিছু উপকার পাওয়া যায়।
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করেঃ বর্তমানে মানুষের একটা প্রচলিত সমস্যা হচ্ছে কোষ্ঠকাঠিন্য। যা আমাদের অনেক ধরনের অসুখ ডেকে। খেজুর রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন খনিজ লবণ ও ফাইবার যা আমাদের কষ্টকাঠিন্য ও বদ হজমে সমাধান করে। আমরা যদি প্রতিদিন সকালে খালি পেটে খেজুর খায় তাহলে কষ্ট কাঠিন্য অনেক অংশই দূর হয়ে যায়।
মস্তিষ্ক সচল রাখেঃ খেজুর এমন একটি পুষ্টি গুণসম্পন্ন ফল যা আমাদের মস্তিষ্ককে সচল রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন আমাদের শরীরের ক্লান্তি দূর করে এবং মনে অনেক শক্তি যোগায়।
দেহের ওজন ভারসাম্য রক্ষা করেঃ ওজন কমানোর ক্ষেত্রে খেজুর খুবই গুরুত্বপূর্ণ। খেজুরের থেকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও খনিজ উপাদান। খেজুরে থাকা ফাইভার আমাদের দেহের ওজন কমানোর ক্ষেত্রে কার্যকরী ভূমিকা রাখে।
গর্ভবতী নারীদের জন্য উপকারীঃ খেজুরের পুষ্টি উপাদানের মধ্যে রয়েছে আয়রন যা গর্ভবতী নারীদের জন্য খুবই উপকারী।। খেজুরের ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ গর্ভবতী নারীদের জন্য কার্যকরী ভূমিকা পালন করেন। একজন গর্ভবতী নারী যদি প্রতিদিন সকালে একটা দুইটি করে খেজুর খায় তাহলে মা ও শিশুর জন্য উপকারী।
ত্বককে মসৃণ রাখেঃ অনেকের বয়স বাড়ার সাথে সাথে চামড়ায় বিভিন্ন ধরনের উপচে যায়। খেজুরে রয়েছে ভিটামিন বি যা ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। প্রতিদিন সকালে খেজুর খেলে এই দাগগুলো আস্তে আস্তে মিটিয়ে যাবে।
হাড়ের সমস্যা দূর করেঃ হার্টের সমস্যা দূরীকরণের ক্ষেত্রে খেজুরের উপকারিতা অপরিসীম। দুর্বল হার্ট কে মজবুত করার ক্ষেত্রে খেজুরের তুলনায় হয় না। প্রতিদিন সকালে খেজুর নিয়মমাফিক খেলে হার্টের সমস্যা সমাধানে কার্যকরী ভূমিকা রাখে।
ক্যান্সার প্রতিরোধঃ ক্যান্সার প্রতিরোধের ক্ষেত্রে খেজুর গুরুত্ব অপরিসীম। কারণ খেজুরে থাকা ভিটামিন খনিজ আয়রন যা ক্যান্সার রোগ প্রতিরোধের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
তারুণ্য ধরে রাখতেঃ তারণ্য ধরে রাখতেন খেজুরের ভূমিকা অপরিসীম। এটি বিভিন্ন ধরনের সংক্রামক রোগ ব্যাধি থেকে মুক্ত রাখে যেমন সর্দি কাশি জ্বর ইত্যাদি। ফলে আমাদের যকৃত কে সুস্থ রাখে।
খেজুর খাওয়ার নিয়ম
খেজুর আমাদের যেহেতু অনেক উপকার করে ।তাই প্রতিদিন নিয়ম করে খেজুর খাওয়া উচিত। খেজুরে থাকা ভিটামিন খনিজ ও ফাইবার আমাদের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। আমরা যদি প্রতিদিন সকালে এক থেকে দুইটি করে খেজুর খেয়ে থাকি তাহলে আমাদের শরীরের অনেক এনার্জি বৃদ্ধি পায়। সারাদিনের কাজ করার ক্ষেত্রেও সহায়ক ভূমিকা পালন করে। তবে রাতে খেজুর খেলে অনেক পুরুষের যৌন বৃদ্ধি ঘটে। হরমোন বৃদ্ধির ক্ষেত্রে খেজুরের ভূমিকা অপরিসীম।
খেজুর খাওয়ার উপকারিতা
একটি যেহেতু পুষ্টিকর একটি ফল। সুতরাং এর উপকারিতা অনেক।
- কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে খেজুর একটি উপকারী ফল
- নিকোটিনিক উপাদানের কারণে এটি দেহের নানা জটিলতা দূর করেন
- সুগার ফ্যাট প্রোটিন ও ভিটামিন অপূর্ব সমন্বয়ের জন্য এটি দেহের ওজন কমাতে সাহায্য করে
- হার্টকে সুস্থ রাখতে খেজুরের ভূমিকা অপারেশন
- যে সকল শিশু পুষ্টিহীনতার ভোগে সেক্ষেত্রে খেজুরের উপকারিতা অপারেশন
- যারা খুশখুসে কাশি বা ব্রংকাইটিসড নামক রোগ হয় তাদের জন্য খেজুর খাওয়া অপরিহার্য
- প্রতিদিন একটা দুটো করে খেজুর খেলে স্টক হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না
- রক্তচাপ যৌন দুর্বলতা নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে খেজুর খাওয়া অপরিহার্য
- দাঁতের ক্ষয় রোধ থেকে মুক্ত করে
- দেহের এনার্জি বৃদ্ধিতে খেজুরের ভূমিকা অপরিসীম
খেজুর খাওয়ার অপকারিতা
খেজুর খাওয়ার উপকারিতার পাশাপাশি কিছু অপকারিতা ও রয়েছে। পুষ্টিবিদরা মনে করেন অতিরিক্ত খেজুর খেলে গ্যাসটি পেট ফাঁপা ডায়রিয়া হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কারণ খেজুরে রয়েছে ফাইবার যা বদহজমের ক্ষেত্রে যেমন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে তেমনি অতিরিক্ত খেজুর খেলেও পেট ফাঁপা পেট ব্যথা হওয়া বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। পুষ্টিবিদরা আরো বলেছেন কারো যদি শ্বাসকষ্টের সমস্যা থাকে তাহলে খেজুর না খাওয়া। এছাড়াও যাদের অ্যালার্জি আছে তাদের খেজুর না হওয়ারও পরামর্শ দিয়েছেন।
দিনে কয়টা খেজুর খাওয়া উচিত
পুষ্টিবিদরা বলেছেন খেজুরে রয়েছে ভিটামিন খনিজ ও আয়রন তাই বেশি খেজুর খাওয়া উচিত নয়। আমরা যদি প্রতিদিন ১-২ করে খেজুর খায় তাহলে আমাদের জন্য সবচাইতে উপকার। তাই আমরা প্রতিদিন একটি দুটি করে খেজুর খাবো।
শুকনো খেজুর খাওয়ার উপকারিতা
শুকনো খেজুরে কচি পরিমাণ আয়রন ও ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম রয়েছে যা আমাদের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার ক্ষেত্রে গুরুতর ভূমিকা পালন করেন। ত্বকের যত্নের ক্ষেত্রে শুকনো খেজুরের ভূমিকা অপরিসীম। কারণ খেজুরে থাকা ম্যাগনেসিয়াম ও আয়রন ত্বকের জন্য খুবই উপকারী।
এছাড়াও খেজুরে রয়েছে বিভিন্ন ভিটামিন ও মিনারেল যা আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার ক্ষেত্রে এ ফলটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। শুকনো খেজুরে থাকা ক্যালসিয়াম হারের গঠনের ক্ষেত্রে সহায় ভূমিকা পালন করে হারকে মজবুত করে মারিকের সুস্থ রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
শুকনো খেজুরে থাকা আয়রন আমাদের শরীরের হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বৃদ্ধি করে শরীরে রক্ত স্বল্পতা দূর করনের ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখে। অনেক গবেষণায় দেখা গিয়েছে খেজুর শরীরের বিভিন্ন কোলেস্টেরল থেকে শুরু করে বিভিন্ন অসুখ-বিসুখের সমস্যার সমাধানের ক্ষেত্রে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।
খেজুর ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা
খেজুরের পুষ্টির গুণ নিয়ে আলাদা করে বলার কিছুই নেই ।কারণ খেজুরে রয়েছে ভিটামিন বি ১ ভিটামিন বি ২ আমের শর্করা প্রোটিন ক্যালসিয়াম আয়রন ম্যাগনেসিয়াম ম্যাঙ্গানিজ সালফার। নিয়মিত খেজুর খেলে স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।খেজুর ভিজিয়ে খাওয়া সবচাইতে বেশি উপকারী ।
কারণ খেজুর ভিজিয়ে রাখলে খেজুরে থাকা ট্যানিক বা ফ্যাটি এসিড দূর হয় যা আমাদের পুষ্টির গুণগত মান আরো বৃদ্ধি পায়। ভিজিয়ে খেজুর খেলে আমাদের খুব সহজে হজম হয় । একটি খেজুর যদি আট থেকে দশ ঘন্টা ভিজিয়ে রাখা যায় তাহলে সবচাইতে ভালো । ওজন কমানোর ক্ষেত্রে ভিজিয়ে খেজুর খাওয়া সবচাইতে বেশি উপকারী। তাই আমাদের খেজুর খাওয়ার আগে ভিজিয়ে রাখা ভালো।
লেখক এর মতামত
যেহেতু খেজুর একটি পুষ্টিকর ফল। তাই আপনাদের সামনে খেজুর বিভিন্ন উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে তুলে ধরেছি। এ আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনারা উপকৃত হন। তাহলে কমেন্ট বক্সে একটি কমেন্ট ও শেয়ার করে দিবেন ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url